ডকুমেন্ট (Documant):
ডকুমেন্ট শব্দের সাধারণ অর্থ হচ্ছে প্রমাণ, দলিল,
চিঠিপত্র, পত্রিকা, পুস্তক ইত্যাদি। টাইপিং এর মাধ্যমে কাগজ কিংবা মনিটরের পর্দায় উপস্থাপিত যে কোনো ধরনের চিঠি পত্র, প্রমাণ, দলিল, ব্যাবসায়ীক নথিপত্র, পুস্তক ইত্যাদি সবকিছু ডকুমেন্ট।
ওয়ার্ড প্রসেসিং:
ওয়ার্ড অর্থ শব্দ এবং প্রসেসিং অর্থ প্রক্রিয়াকরন। ওয়ার্ড প্রসেসিং শব্দের অর্থ শব্দ প্রক্রিয়াকরন। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে বর্ণ, সংখ্যা, চিহ্ন বা শব্দ কে কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রসেস করে ডকুমেন্ট তৈরী করার পদ্ধতিকে ওয়ার্ড প্রসেসিং বলে। যে প্রোগ্রাম ব্যবহার করে ওয়ার্ড প্রসেসিং বা শব্দ প্রক্রিয়াকরনের কাজ করা হয় তাকে ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রাম বলে। কম্পিউটারে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারিক (Application) প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। তাহলে ওয়ার্ড প্রসেসিং করতে একটি প্রোগ্রাম লাগবে। সুতরাং যে প্রোগ্রামের সাহায্যে ওয়ার্ড প্রসেসিং করা হয় তাকে ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রাম বলে। বহুল ব্যবহারিত কয়েকটি ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রাম হলো:
01. Notepad 04. WordPad
02. Latex 05. WordStar
03. WordPerfect 06. Microsoft word
বর্তমান কম্পিউটার বিশ্বে প্রায় সর্বত্র ওয়ার্ড প্রসেসর হিসেবে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হচ্ছে, মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক তৈরি ব্যবহারিক সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম।
মাইক্রোসফট কর্পোরেশন :
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এটি বিভিন্ন কম্পিউটার ডিভাইসের জন্য সফটওয়্যার তৈরি ও লাইসেন্স দিয়ে থাকে। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের রেডমল্ড শহরে অবস্থিত। এদের সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যার হলো মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এবং মাইক্রোসফট অফিস।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর ধারণা:
আমেরিকার বিখ্যাত কোম্পানি মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক তৈরী একটি ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম হচ্ছে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড। প্রথম তৈরী মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর চাইতে বর্তমান মাইক্রোসফট ওয়ার্ড অনেক বেশি সুবিধাজনক। বর্তমানে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর সর্বশেষ ভার্সন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০১৯ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহারিক প্রোগ্রামটি একক ভাবে বাজারে পাওয়া যায় না। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হলে সমগোত্রীয় আরও অন্যান্য প্রোগ্রাম (যেমন মাইক্রোসফ্ট এক্সেল, মাইক্রোসফ্ট পাওয়ার পয়েন্ট, মাইক্রোসফট এক্সেস ইত্যাদি) সহ প্যাকেজ সংগ্রহ করতে হবে। সমস্থ প্যাকেজ কে একসাথে বলা হয়-
মাইক্রোসফট অফিস। মাইক্রোসফট অফিস প্যাকেজ প্রোগ্রাম টি টাকা দিয়ে কিনে সংগ্রহ করতে হয়। তবে বাংলাদেশে সাধারনত ফ্রিতে পাওয়া যায়।
মাইক্রোসফট অফিসের কয়েকটি ভার্সন নিচে উল্লেখ করা হলো:
Ø মাইক্রোসফট অফিস-৯৭
Ø মাইক্রোসফট অফিস-
এক্সপি
Ø মাইক্রোসফট অফিস
-২০০৩
Ø মাইক্রোসফট অফিস
-২০০৭
Ø মাইক্রোসফট অফিস
-২০১৪
Ø মাইক্রোসফট অফিস
-২০১৬ ইত্যাদি ।
আইটি সেক্টরের প্রত্যেকটি হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার প্রতিনিয়ত আপডেট হতেই থাকে। সে হিসাবে মাইক্রোসফট অফিস প্রোগ্রামটিও আপডেট হয়। বর্তমানে মাইক্রোসফট অফিস ২০১৯ ভার্সন ও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
কোন ভার্সন টি ব্যবহার করবো?:
সাধারণত আপডেট ভার্সনটি সবার পছন্দের প্রথম তালিকায় থাকে। কিন্তু আমরা মাইক্রোসফট অফিস এর ২০০৭ ভার্সন টি ব্যবহার করবো। ২০০৭ শিখে ফেলতে পারলে ২০০৭ এর পরি যত গুলো ভার্সন বাজারে আসছে সেসব ভার্সন গুলোতে সহজে কাজ করতে পারবো। ২০০৭ এর পরবর্তী ভার্সনগুলোর সাথে ২০০৭ ভার্সন এর মৌলিক মিল আছে। বাংলাদেশের প্রায় সবাই ২০০৭ ভার্সন ব্যবহার করে। এমনকি কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসর হিসেবে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০০৭ ভার্সন ব্যবহার করার জন্য সরকারি নির্দেশনা আছে। সুতরাং মাইক্রোসফট অফিস ২০০৭ এর ব্যবহার আমরা শিখবো। আমি এখানে ২০১৬ ভার্সনের সাহায্যে লেকচার তৈরি
করেছি।
ওয়ার্ড প্রসেসর এর সুবিধা ও অসুবিধা:
ওয়ার্ড প্রসেসর (যেমন মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড, ওয়ার্ড পারফেক্ট ইত্যাদি) প্রোগ্রাম কম্পিউটারের সাহায্যে টাইপ করা, সেভ করা, এডিট করা, ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা খুব সহজ করে দিয়েছে। স্কুল, কলেজের বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা আমাদের জন্য খুব সহজ হয়ে গেছে। নিচে ওয়ার্ড প্রসেসর এর কয়েকটি সুবিধা-অসুবিধা দেওয়া হলো:
এডিট (Edit) করা:-
আমরা যখন টাইপ রাইটার ব্যবহার করে ডকুমেন্ট তৈরী করি তখন ভুল হলে সংশোধনের কোনো ব্যবস্থা থাকে না। ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে খুব সহজে ভুল সংশোধন করা যায়। এমনকি বানান ভুল হইলেও ওয়ার্ড প্রসেসর এর সাহায্যে বানান শুদ্ধ করা যায়।
ইমেজ যুক্ত করা:-
ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে ডকুমেন্ট এর মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড, বোর্ডার, ক্লিপ-আর্ট, গ্রাফিক্স ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। কিন্তু গতানুগতিক টাইপ রাইটার বা অন্য কোন ভাবে তা করা খুব কঠিন।
টেমপ্লেট ব্যবহার:-
ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে টেমপ্লেট এর সাহায্যে ডকুমেন্ট তৈরী করা যায়। টেমপ্লেট হচ্ছে প্রোগ্রামের মধ্যে ডিজাইন করে রাখা ডকুমেন্ট ফরম্যাট।
ব্যয়বহুল:-
ওয়ার্ড প্রসেসর অনেক টাকা ব্যয় করে ক্রয় করতে হয়। নির্দিষ্ট সময় পর আবার টাকা খরচ করে আপডেট করতে হয়।
যন্ত্র:-
কম্পিউটিং যন্ত্র ছাড়া ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করা যায় না। একটি কম্পিউটিং মেশিন কিনতে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয়।
ব্যবহার যোগ্যতা:-
ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করার জন্য প্রশিক্ষণ লাগে। প্রশিক্ষণ ছাড়া ওয়ার্ড প্রসেসর এর ফিচার গুলো ব্যবহার করা যায় না। যেমন বুলেট, ফন্ট কালার, জটিল সমীকরণ ইত্যাদি।
ভার্সন:-
ওয়ার্ড প্রসেসর এর ভার্সন নিয়মিত পরিবর্তন হতেই থাকে। অনেক সময় পুরাতন ভার্সনে তৈরী ডকুমেন্ট নতুন ভার্সনে কাজ করা যায় না।
👍
ReplyDeleteuseful post
ReplyDeleteThank
Delete