কিছু খুঁজছি, তাহলে এখানে।

২.৪ Computer Virus and Anti – Virus

একটি সময় ভাইরাস শব্দটি শুধুমাত্র জীববজ্ঞিান কিংবা মানব দেহের সঙ্গে সর্ম্পকযুক্ত শব্দ হিসেবে ব্যবহার করতাম কিন্তু র্বতমান সময়ে বিভিন্ন ইলকেট্রনক্সি ডিভাইস, যেমন: কম্পিউটার, র্স্মাটফোন, পেনড্রাইভ ইত্যাদির সঙ্গে ভাইরাস শব্দটি যুক্ত হয়ে গেছে মানব ভাইরাস মানবদেহের ক্ষতি করে কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটারের ক্ষতি করে

ভাইরাস কয়েকটি শব্দের সংক্ষিপ্ত একটি রূপ ভাইরাস (VIRUS) শব্দটির পূর্ণরূপ হলো– Vital Information Resources Under Seize যার বাংলা অর্থ দাড়াইগুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা রিসোর্স অন্য কারো অধীনে বাজেয়াপ্ত এই পূর্ণরূপের মধ্যেই ভাইরাস শব্দটির পরিচয় অনেকটাই লুকিয়ে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারে এমন কিছুকে বলা হবে ভাইরাস আরও বিস্তারিতভাবে বললে বলা যেতে পারে যা কম্পিউটারের মধ্যে প্রবেশ করে কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তথ্য মুছে ফেলতে পারেফাইল নষ্ট করতে পারে, ডিভাইসের উপর থেকে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিতে পারে এবং মানবদেহের ভাইরাসের মতোই বাহকের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে সহজে গমন করতে পারে

কম্পিউটার ভাইরাস:

কম্পিউটার ভাইরাস একটি ছোট প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার যা এমনভাবে ডিজাইন করা যাতে সে স্বয়ংক্রিয় ভাবে এক কম্পিউটার থেকে আর এক কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং কম্পিউটার অপারেশনে ভুমিকা রাখে

২.৪.১ কম্পিউটার ভাইরাস কেন তৈরি হয়

কম্পিউটার ভাইরাস একটি প্রোগ্রাম সুতরাং কেউ কেউ না এটা তৈরি করে প্রোগ্রামাররা কেন এই ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম তৈরি করে নিচে তা উল্লেখ করা হলো

) বিশেষ কোন উদেশ্যে অন্যের কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রন করার জন্য প্রোগ্রামার ভাইরাস তৈরি করে

) গুরুত্বপূর্ণ তথা স্পর্শকাতর বা সেনসিটিভ তথ্য যেমন পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার, ব্যক্তিগত বিস্তারিত তথ্য ইত্যাদি তথ্য চুরি করার জন্য প্রোগ্রামার ভাইরাস তৈরি করে

) অন্যের নেটওয়ার্ক অকোজে বা ডিসএবল করার জন্য

প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য

) নিজের দক্ষতা প্রমান করার জন্য

) এমনকি টাকা উপার্জন করার জন্যও প্রোগ্রামার ভাইরাস তৈরি করে থাকেন

২.৪.২ ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়

ভাইরাস সাধারনত তিনটি উপায়ে ছড়ায় যথা

) ইন্টারনেটের মাধ্যমে :

যদি আপনি কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাহলে অনলাইন অনেক সংক্রমিত (infected) ওয়েবসাইটের থেকে আপনার computer  ভাইরাস ঢুকতে পারে ৭০% লোকেদের কম্পিউটারে অ্যাডওয়্যার (adware) এবং malware, spyware ভাইরাস ইন্টারনেট থেকেই সিস্টেমে এসেপড়ে

) (USB) ইউ এস বি ডিভাইস বা রিমুভেবল মিডিয়া :

আমরা অনেক সময় অনেক রকমের USB device যেমন, pen drive, অন্য mobile থেকে, hard disk থেকে অনেক রকমের ফাইল নিজের কম্পিউটারে কপি করে রাখি এবং, এই ফাইল গুলি কপি করার সময় আমাদের কম্পিউটারে অন্যদের কম্পিউটার থেকে ভাইরাস অনেক সহজে ঢুকে যায় এবং আমরা বুঝতেও পারিনা

) Email attachment থেকে :

 আমাদের মেইল আইডি তে প্রতিদিন অনেক রকমের ইমেইল আসে এবং, এই আশা ইমেইল গুলিতে ফাইল এটাচমেন্ট (attachment) এর মাধ্যমে ভাইরাস ঢুকতে পারে

২.৪.৩ ভাইরাসের প্রকারভেদ

প্রতিদিন কিছু কম্পিউটার অপরাধী নতুন নতুন ভাইরাস (Virus) তৈরি করছে এসব ভাইরাসরে বিস্তার বিভিন্ন ভাবে অতিদ্রুত ঘটে থাকে কম্পিউটার আক্রমণের ধরন অনুসারে ভাইরাস বিভিন্ন ধরনরে হতে পারে যা নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো

. ট্রোজান হর্স ভাইরাস (Trogan Horse Virus) : 

গ্রীক পুরাণের ট্রোজান ঘোড়ার নাম অনুসারে ভাইরাসরে নামকরণ করা হয়েছে ভাইরাস খুবই মারাত্মক এর প্রধান উদ্দশ্যেই হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট ফলাফলের দিকে ধাবিত হয়  ট্রোজান হর্স ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কোনো প্রোগ্রাম চালু করলে ফাইল বা ডিস্ক নষ্ট হতে পারে আবার কখনও ভাইরাস সমস্ত হার্ডডিস্ক ফরমেট করে ফেলতে পারে

. বুট সেক্টর ভাইরাস (Boot Sector Virus) : 

বুট সেক্টর কম্পউিটারের হার্ডডিস্কে একটি অংশ কম্পউিটারের অপারেটিং সিস্টেম কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ন্ত্রন করাই হলো বুট সেক্টরের কাজ আর বুট সেক্টর ভাইরাস সরাসরি কোনো ফ্লপি বা হার্ডডিস্কের বুট সেক্টরকে নিজেদের কোড দ্বারা পরিবর্তন করে এবং অপারেটিং সিস্টেমের একটি অংশ হয়ে যায় জাতীয় ভাইরাস প্রথমে নিজেদেরকে মেমরীতে স্থাপন করে এবং পর্যায়ক্রমে কম্পিউটারের বুটিং সেক্টরকে  ধ্বংস করে ফেলে

. পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস (Partition Sector Virus) :

হার্ডডিস্কের প্রথম সেক্টর হলো পার্টিশন সেক্টর এটি ডিস্ক সম্পর্কিত তথ্য ধারণ করে থাকে আর কোনো কম্পিউটার পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের পার্টিশন সেক্টররেক ক্ষতিগ্রস্থ করে

. ম্যাক্রো ভাইরাস (Macro Virus) :

ম্যাক্রো ভাইরাস হলো প্রথম ভাইরাস যা ডাটা ফাইলগুলোকে আক্রান্ত করে থাকে ম্যাক্রো ভাইরাস ম্যাক্রো অবজেক্ট থেকে তৈরি হয় এবং ব্যবহৃত ফ্লপি ডিস্ক ইন্টারনাল নেটওয়ার্ক কিংবা ইন্টারনেট ফাইল ডাউনলোড করা থেকে ভাইরাস ছড়ায় বর্তমান সময়ে ধরনরে ভাইরাসরে আক্রমণ প্রায়ই লক্ষ করা যায়

. প্রোগ্রাম ভাইরাস (Program Virus) :

 প্রোগ্রাম ভাইরাস তাদরে ভাইরাস কোড এক্সকিউটেবল ফাইলের প্রথম বা শেষে যুক্ত করে অত:পর মূল প্রোগ্রামের কোনো অংশবিশেষ তাদের নিজস্ব  কোড দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে ফেলে

. ফাইল ভাইরাস (File Virus) : 

যেসব ফাইলের এক্সটেনশন .exe  .com; সেসব ফাইলএ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় আক্রান্ত প্রোগ্রাম রান করলে প্রথমে ভাইরাস রান করে অরিজিনাল প্রোগ্রামকে নিয়ন্ত্রন করে এবং পরে তার অনুরূপ তৈরি করার জন্য এর কোডকে অন্য ফাইল বা ডিস্কে কপি করে

. ওভার রাইটিং ভাইরাস (Over Writing Virus) :

ওভার রাইটিং ভাইরাস আক্রান্ত ফাইলকে নিজস্ব কোড দ্বারা ওভার রাইট করে ফেলে তাই প্রোগ্রামরে আর কোনো কাজ থাকে না

. জেনারেল পারপাস ভাইরাস (General Purpose Virus) :

 জেনারেল পারপাস ভাইরাস মূলত বুট সেক্টর ভাইরাস কমান্ড পারপাস ভাইরাসের মতো গোপন পথে কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং অনেক ক্ষতি করে ভাইরাস আক্রমণের ক্ষতি দূর করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে

. কমান্ড পারপাস ভাইরাস (Command Purpose Virus) :

 কমান্ড পারপাস ভাইরাস File I/O Sys, Ms-Dos Sys, IBMBIO.Com IBMDOS.Com ফাইলগুলো নষ্ট করে থাকে বুটিং সিস্টেম চালু অবস্থায় এই ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং বিশেষ ক্ষতি করে

১০. পলিমরফিক ভাইরাস (Polymorphic Virus) :

জাতীয় ভাইরাস স্ক্যানিং এর সময় নিজেদের পরিবর্তন করে স্ক্যানারকে ফাঁকি দিয়ে থাকে কারণ এদের কোড কোনো নির্দিষ্ট প্যার্টানে থাকে না আর কোড এনক্রিপটিং পদ্ধতিতে পরিবর্তিত হয়ে পরচিালতি হয়

২.৪.৪ ভাইরাস আক্রান্ত কম্পিউটারের লক্ষন

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস রয়েছে ফলে স্বাভাবিকভাবে সকল ভাইরাস আক্রান্ত কম্পিউটারে একই লক্ষণ প্রকাশ পাবে না তাহলে কীভাবে বুঝবনে আপনার কম্পিউটারটি বা ডিভাইসটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কিনা?

ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কম বেশী সব কম্পিউটারে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়; আপনি এসব লক্ষণ দেখে ধারণা করতে পারবনে আপনার ডিভাইসটি আসলেই ভাইরাসরে দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে কিনা

স্বয়ক্রিয়ভাবে অ্যাপ্লিকেশন চালু বা বন্ধ হওয়া, সিস্টেম এরর প্রর্দশন, ডিভাইসটি হঠাৎ হ্যাং হয়ে যাওয়া, অহেতুক কোনো নির্দেশনা স্ক্রিনে প্রদর্শন, প্রোগ্রাম লোড নিতে অধিক সময় নেওয়া, ইন্টারনটে গতি স্লো হয়ে যাওয়া, ডিভাইসের ফাইল এমনিতেই ডিলিট হয়ে যাওয়া, সফটওয়্যার হার্ডওয়্যারের ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়া, অপ্রয়োজনীয়ভাবে হঠাৎ করেই কম্পিউটার বুট করতে শুরু করা, অপ্রয়োজনীয় অজ্ঞাত সব ফাইল এমনিতেই ডিভাইসে চলে আসা ইত্যাদি এসব লক্ষণগুলোর কোনোটি আপনার কম্পিউটারে প্রকাশ পেলে ধরে নিবেন আপনার কম্পিউটারটি বা ডিভাইসটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে

২.৫ এন্টি - ভাইরাস (Anti – Virus)

অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা সংক্রামিত কম্পিউটার থেকে কম্পিউটার ভাইরাস এবং অন্যান্য দূষিত সফটওয়্যার সনাক্ত করে এবং সরিয়ে দেয় জনপ্রিয় কয়েকটি এন্টিভাইরাস হচ্ছে; Norton, Avast, Kaspersky, Avira, McAfee ইত্যাদি

ডিজিটাল জগতে এযাবৎ যত ভাইরাস এসেছে তার প্রত্যেকটির ডেফিনেশন বা সঙ্গা  এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামের ডিরেক্টরীতে বা ডাটাবেসে সংরক্ষন করে এন্টিভাইরাস কম্পিউটারের সমস্থ ফাইল চেক করে কম্পিউটারের কোন ফাইল এর আচরন যদি তার ডাটাবেসে থাকা ভাইরাসের সঙ্গার সাথে মিলে যায়, তাহলে এন্টিভাইরাস কম্পিউটারের ফাইলকে ভাইরাস হিসেবে সনাক্ত করে এবং কিছু ক্ষেত্রে রিমুভ করে

ডিজিটাল জগতে প্রতিনিয়ত ভাইরাস তৈরি হচ্ছে এন্টিভাইরাস কোম্পানীও প্রতিনিয়ত নতুন আগত ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরি করে তাদের ওয়েব সাইটে দিয়ে দিচ্ছে সর্বোত্তম সেবা পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত এন্টিভাইরাস আপডেট রাখতে হবে

২.৫.১ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে কম্পিউটারকে রক্ষা করা

মানবদেহে যাতে ভাইরাসের আক্রান্ত না হয় সেজন্য অনেক ধরনের কৌশল অবলম্বন করি ঠিক তেমনী কম্পিউটারকে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত যেমন

) যেসব উপায়ে ভাইরাস এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে সেসব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন কর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

) কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমকে আপডেট রাখতে হবে, অপারেটিং সিস্টেম এর firewall অন করে রাখতে হবে 

) যতদূর সম্ভব পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে

) কম্পিউটারে পেনড্রাইভ বা মেমরী কার্ড প্রবেশ করার ক্ষেত্রে সতর্কতা করতে হবে পেনড্রাইভ, মেমরী কার্ড ইত্যাদি রিমুভেবল ডিভাইস ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই এন্টিভাইরাস দিয়ে স্কেন করতে হবে কখনোই ভাইরাসযুক্ত পেনড্রাইভ বা মেমরী কম্পিউটারে প্রবেশ করানো যাবে না

) ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় ইন্টারনেট সিকিউরিটি এন্টিভাইরাস এক্টিভ রাখতে হবে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় অবিশ্বস্ত কোন ওয়েবসাইট ভিজিট এবং অবিশ্বস্ত কোন ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড থেকে যতদূর সম্ভব বিরত থাকতে হবে

২.৫.২ আক্রান্ত কম্পিউটারকে ভাইরাসমুক্ত করা

এতকিছুর পরও যদি কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে কম্পিউটারে এন্টিভাইরাস ইনস্টল করতে হবে তারপর এন্টিভাইরাসের সাহায্যে কম্পিউটারের সমস্থ ফাইল স্ক্যান করতে হবে প্রাপ্ত ভাইরাস কে রিমুভ করতে হবে অনেক সময় এমন ক্ষতিকর ভাইরাস পাওয়া যায় যা এন্টিভাইরাস দিযেও রিমুভ করা সম্ভব হয়না এজন্য কম্পিউটার যাতে ভাইরাসে আক্রান্ত না হয় সেদিকে সবচেয়ে বেশী খেয়াল রাখতে হবে

 

6 comments:

  1. Onk helpful sir,,,

    ReplyDelete
  2. Thank you sir sob kicu amder bodhgommo kore sajiye deyar jonno..

    ReplyDelete

Thank for your comment

”কোটেশন”

ডিজিটাল শিক্ষা গ্রহন করি। নিজে ডিজিটাল হই। দেশকে ডিজিটাল করি। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

সাইটটি ভাল লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন